সমস্ত লেখাগুলি

রসুনের কোষের ন্যায় ধার্মিকরাও এক বিন্দুতে আবদ্ধ -
শাহাদাত হোসেন
Nov. 27, 2024 | মুক্তমনা | views:9549 | likes:0 | share: 0 | comments:0

যে যাই বলুক ইসলাম কখনোই ভিন্নমত ও পথকে স্বীকৃতি দেয় না তথা স্বীকার করে না। ইসলামের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো অপরকে তার মত ও পথের অনুসারী বানানো। তাদের মধ্যে নেতৃত্ব,গোষ্ঠীগত ও বিভিন্ন কারণে যত মত পার্থক্যই থাকুক না কেন সর্বশেষে তারা এই মত পোষণ করে যে 

" সকল মুসলমান ভাই ভাই '। ক্ষমতা, গোষ্ঠীগত ও বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দন্দ্ব ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের থাকতে পারে কিন্তু তাই বলে তারা ভিন্নমত ও পথকে কখনোই মুসলিম ঈমানদার ভাইয়ের চেয়ে প্রাধান্য দিবে না। তাছাড়া প্রকাশ্যে অথবা রননীতি রনকৌশলের কারণে আপোষ করতে বাধ্য হলেও তারা এক ও অভিন্ন থাকবে ও গোপনে মিলিত হবে। নবী মুহাম্মদ হুদাইবিয়ার সন্ধি করেও শক্তি সঞ্চয়ের পর তা ভঙ্গ করেছিলেন। এক মুসলমান অপর মুসলমানের দোষ ডেকে রাখবে- এটি ইসলামী বিধান। তাই তো মাদ্রাসায় বাচ্চাদের উপর এত এর নির্যাতন করার পরেও কোনও হুজুর সমালোচনা করে না।  সৌদি আরবে ঘরে ঘরে বাংলাদেশী গৃহকর্মী নির্যাতিত হওয়ার পরেও হুজুররা সৌদি আরবের সমালোচনা করে না।  ইসলামের নেশা হারাম হওয়া সত্ত্বেও হুজুররা হিরোইন ব্যবসায়ী তালেবানদের সমালোচনা করে না।

মাওলানা ভাসানী সারা জীবন কমিউনিজম এর  রাজনীতি করেও মাথার টুপি, আলখাল্লা ও নামাজ ছাড়ে নাই। সেই ভিতর দিক দিয়ে বাংলাদেশের বামপন্থী রাজনীতিকে ইসলামাইজেশন করে দুর্বল করে দিয়েছে। তাই C P B মত কমিউনিস্ট পার্টির অনেক কর্মীদের মুখ শুনা যায়, খোলাফায়ে রাশেদীন এর আমলে সমাজতন্ত্র ছিল। হুজুর এই কৌশল অবলম্বন করে অচল মালকে অর্থাৎ ইসলামকে সর্বাধুনিক মতবাদ তথা সমাজতন্ত্র বানিয়ে দিয়েছে। আজ বিএনপি রাজনীতি করছে জামাত নিয়ে, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করছে হেফাজতকে নিয়ে। কিন্তু এই দুটি ইসলামিক দলই বিএনপির আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে না। কারণ তারা একই কোরআন ও একই হাদিস পড়ে সংগঠন করছে।

জ্ঞানবিজ্ঞানে মুক্তমনাদের থেকে অনেক পিছিয়ে থাকার পরেও ধর্ম ব্যবসায়ীরা এত কৌশলী হল কিভাবে? বিজ্ঞানের মতে কোনও কিছুই কারণ ব্যতীত সংগঠিত হয় না। মুক্তমনাদের জীবিকার জন্য অসংখ্য পথ খোলা রয়েছে কারণ তারা আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের সংস্পর্শে এসে অনেক কিছুই শিখেছে এবং এদিকেই তাদের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে রেখেছে। ভিন্ন দিকে নজর দেওয়া তাদের পেশার জন্য ক্ষতিকর। তাই তো এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে একতা লক্ষ্য করা যায় না।

কিন্তু ধর্মান্ধদের জন্য শুধু ধর্ম ব্যবসা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নাই। কারণ তারা ১৪৫০ বছর পূর্বের আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের অনুপযোগী, ফালতু, বানোয়াট গল্প ভিন্ন আর কিছুই তারা শিখে নাই। এই জ্ঞান দিয়ে বর্তমান যুগে কামলাগিরিও করা যাবে না। ওয়াজ নসিয়ত করে যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায় সেই যোগ্যতার দ্বারা তারা হয়তো একটি কারখানার নিম্ন পর্যায়ের শ্রমিকের কাজ পাবে। তাতে করে কোটি কোটি টাকা অর্জন করা কল্পনাও করতে পারবে না। তাই ধর্মের প্রচার ও প্রসারের ব্যাপারে তারা আন্তরিক হবে এটাই স্বাভাবিক। যত অন্ধা বাড়বে তত নাকি টাকা বাড়তে থাকবে।

আবার এখানে হুরের লোভ দেখিয়ে নাচানোর মত বিশাল এক অন্ধ গোষ্ঠী রয়েছে।

তাই দেশে পরিকল্পিত উপায়ে অন্ধ জনগোষ্ঠী সৃষ্টির লক্ষ্যে সুদূর অতীত থেকেই তারা একটি সুদূরপ্রসারী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে রেখেছে। এটি তিনটি পর্যায়ে সম্পাদন করা হয়।

প্রথমটি হল রেডিক্যাল তথা জিহাদি গ্রুপ, দ্বিতীয়টি হল নির্বিচ্ছিন্নভাবে ইসলাম প্রচার করার গ্রুপ এবং তৃতীয়টি হল মিনিমাইজ করা তথা তাকিয়া গ্রুপ।

সাধারণত ১২ থেকে ২০ বছরের বয়সী অবুঝ যুবকদেরকে জিহাদি বানানো হয়। যাদের ইসলাম সম্পর্কে তেমন জ্ঞান নাই। ধর্মব্যবসায়ী সুবিধাবাদী নেতৃবৃন্দ ও ধান্দাবাজ ওয়াজিরা কেবল ধান্দা ও ইসলাম প্রচার করে বেড়ায়। মডারেট তাকিয়াবাজরা কখনো যুক্তি প্রমাণে হেরে গেলে বলবে, আরে ভাই এসব মোল্লারা যা বলে এগুলো ইসলাম নয়। অথচ এরা কখনোই মোল্লাদের কার্যকলাপের নিন্দা করে না। বরং এটি তাদের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার একটি কৌশল মাত্র।

তাদেরকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা অথবা সুনির্দিষ্ট দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ না করে তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলার ও তাদেরকে খুশি করার জন্য মডেল মসজিদ ও মাদ্রাসা বানিয়ে দিলে কোনও লাভ হবে না। এই অকৃতজ্ঞরা যদি একবার গদিতে যাইতে পারে তাহলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নাম নিশানা বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলবে।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929